১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শামীম ওসমানের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিটিআরসি’র পাওনা ১২৬ কোটি

শামীম ওসমানের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিটিআরসি’র পাওনা ১২৬ কোটি

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও পুত্র ইমতিনান ওসমানের নামে থাকা কে টেলিকমিউনিকেশন থেকে ১২৬ কোটি টাকা পাওনা আছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শামীম ওসমানের পরিবার আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় সরকারের টাকা আদায় একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যবসায় নামেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি ২০১২ সালে স্ত্রী সালমা ওসমান ও ছেলে ইমতিনান ওসমানের নামে কে টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে বা আইজিডব্লিউ লাইসেন্স নেন, যার মাধ্যমে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসত। দেশের বাইরে থেকে করা (আন্তর্জাতিক ইনকামিং) কলগুলো আইজিডব্লিউ অপারেটরের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করে। নীতিমালা অনুসারে, আন্তর্জাতিক কলের আয় থেকে ৪০ শতাংশ অর্থ বিটিআরসিকে দিতে হয়। সেই হিসেবে কে টেলিকমিউনিকেশনের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা দাঁড়িয়েছিল ১২৬ কোটি টাকা। সেই টাকা তারা পরিশোধ করেনি। বিটিআরসি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করলেও টাকা আদায় করতে পারেনি। বিটিআরসির আগের প্রশাসন বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল টাকা আদায়ে জোর তৎপরতা না থাকা এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে ঢিলেমির। সংস্থাটির কমিশনার (অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগ) মুশফিক মান্নান চৌধুরী বলেছেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসি এখন কাজ করবে।

বিটিআরসি ও আইজিডব্লিউ খাতের সূত্র বলছে, তাদের উদ্দেশ্যই ছিল অল্প সময়ে বড় অঙ্কের অর্থ আয় করে চলে যাওয়া। দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবসা করা তাদের লক্ষ্য ছিল না। এ কারণে তখন কম খরচে কল এনে তারা বিপুল অর্থ আয় করে। সেখান থেকে বিটিআরসির পাওনা ও লাইসেন্স ফি না দিয়ে তারা চলে যায়। শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান ও পুত্র ইমতিনান ওসমানের নামে থাকা কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের মালিকানা পরিবর্তন করা হয় ২০১৩ সালের আগস্টে। নতুন মালিক হন মো. সাখাওয়াত হোসেন, দেবব্রত চৌধুরী ও মো. রকিবুল ইসলাম। এই তিন ব্যক্তির কোনো খোঁজ বিটিআরসি পায়নি। তবে ২০১৫ সালের ৩১ মে আইজিডাব্লিউ (ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে) গাইডলাইনস ও লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করায় কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের আইজিডাব্লিউ অপারেটরের লাইসেন্স বাতিল করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকার বিটিআরসির মতো কমিশনকেও করায়ত্ত করেছে এবং ক্ষমতা খর্ব করেছে। পটপরিবর্তনের সুযোগে বিটিআরসিকে এসব বিষয়ে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে। এমনকি এ ধরনের অনিয়মে বিটিআরসির কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়