১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রেস নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭:০৫, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গুলি চালালেন শামীম ওসমান, আসামি আইভী

গুলি চালালেন শামীম ওসমান, আসামি আইভী

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম। এমন অভিযোগে মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই নাজমুল হক। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকেও।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মামলায় ১৩২ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আদমজী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম। তলপেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিনারুলকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন রাজশাহী তার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

‘ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ২০ জুলাই সন্ধ্যায় শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী ও কায়সার হাসনানের নেতৃত্বে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রসহ আদমজী এলাকায় ছাত্রজনতার উপর হামলা চালায়। এ সময় মিনারুল ওই ঘটনার মধ্যে পড়ে গেলে তাকে লক্ষ্য করে শামীম ওসমান তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে মিনারুলের তলপেটে গুলি লাগে এবং সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে’, বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় এর আগে নারায়ণগঞ্জে দুই ডজনেরও বেশি মামলা হলেও এই প্রথম কোনো মামলায় আইভীকে আসামি করা হয়েছে। আইভী নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। এই মামলায় আসামির তালিকায় তার ছোটভাই মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বলেরও নাম রয়েছে। আরও অন্তত দু’টি মামলায় উজ্জ্বলকে আসামি করা হয়েছে।

সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০০৩ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন।
গণঅভ্যূত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৯ আগস্ট দেশের বাকি সিটি কর্পোরেশনগুলোর মতো টানা তিনবারের নির্বাচিত সিটি মেয়র আইভীকেও অপসারণ করে অন্তবর্তীকালীন সরকার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও ‘পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এই ধরনের কোনো হামলার শিকার হতে হয়নি।

তাছাড়া, একই দল করলেও শামীম ওসমান ও আইভীর মধ্যে সম্পর্কের বৈরিতা ছিল স্পষ্ট। এমনকি শামীম ওসমান ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে প্রকাশ্যে ‘গডফাদার’ বলেও অভিহিত করতেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। ওসমান পরিবারের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অবস্থান ছিল আইভীর। অথচ শামীম ওসমানের গুলিতে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় আইভীকে আসামি করা নিয়ে শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়